বান্দরবানে পাহাড়ধসের ঝুঁকিতে হাজারো পরিবার, টানা বৃষ্টিতে বাড়ছে বিপদ

- আপডেট সময় : ০১:৫৫:০৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩০ মে ২০২৫ ৩৩ বার পড়া হয়েছে
পার্বত্য বান্দরবানের সাতটি উপজেলা ও জেলা সদরের বিভিন্ন এলাকায় প্রায় দুই হাজার পরিবারের কয়েক হাজার মানুষ পাহাড়ধসের চরম ঝুঁকির মধ্যে বসবাস করছেন। সম্প্রতি টানা ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে কিছু কিছু অঞ্চল ইতোমধ্যে পাহাড়ি ঢলে প্লাবিত হয়েছে। পাশাপাশি ঝুঁকিপূর্ণ বসতঘর ধসে পড়ার আশঙ্কা আরও বেড়েছে। প্রশাসনের হিসেবে, জেলায় প্রায় ১০ হাজার মানুষ অতিমাত্রায় ঝুঁকিতে রয়েছেন।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে জেলার সাত উপজেলায় ২২০টি অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। পাশাপাশি জরুরি প্রয়োজনে জাতীয় হেল্পলাইন ৯৯৯ অথবা জেলা পুলিশের কন্ট্রোল রুমের নম্বরে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।
জানা গেছে, বান্দরবানের পাহাড়ের পাদদেশে দীর্ঘদিন ধরে অপরিকল্পিতভাবে বসতি স্থাপন করেছেন কয়েক হাজার পরিবার। সদর উপজেলার বালাঘাটা, কালাঘাটা, বনরুপা, নতুন পাড়া, ইসলামপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় উঁচু-নিচু পাহাড়ের ঢালে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানে বসবাস করছেন হাজারও মানুষ। এছাড়া জেলার অন্যান্য উপজেলাগুলো—লামা, আলীকদম, নাইক্ষ্যংছড়ি, রুমা, থানচি ও রোয়াংছড়িতেও পাহাড়ের নিচু এলাকায় বসবাস করছেন অসংখ্য পরিবার।
প্রত্যেক বছর এসব ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় নতুন করে বসতি গড়ে উঠছে, যার ফলে আগের বছরের তুলনায় এ বছর ঝুঁকিপূর্ণ পরিবারের সংখ্যা আরও বেড়ে গেছে। পাহাড়ের উপর মাটি কেটে ঘর নির্মাণের কারণে বর্ষা মৌসুমে ভারী বৃষ্টিপাতে পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটে, যা প্রাণহানির ঝুঁকি বহন করে। ঝুঁকিপূর্ণ এসব এলাকা থেকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে প্রশাসন বারবার মাইকিং করলেও অনেকেই ঘরবাড়ি ছাড়তে নারাজ।
এদিকে জেলার বিভিন্ন এলাকায় টানা বৃষ্টিপাতের ফলে সাঙ্গু ও মাতামুহুরী নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে নিচু এলাকাগুলো প্লাবিত হয়েছে। পাহাড়ি মাটি সরে আসায় অনেক সংযোগ সড়কে যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগও বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
আবহাওয়া বিভাগ জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় বান্দরবানে ১৭৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে এবং আগামী ৪৮ ঘণ্টা টানা বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। পাহাড়ের নিচে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারী পরিবারগুলোকে নিরাপদ স্থানে সরে যেতে বলা হচ্ছে।
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নিম্নচাপের কারণে অব্যাহত বৃষ্টিপাত হচ্ছে এবং সম্ভাব্য পাহাড়ধসের আশঙ্কায় ঝুঁকিপূর্ণ বসতিগুলো খালি করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে এবং স্থানীয়দের সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বনের অনুরোধ জানানো হয়েছে।