সর্বশেষ
বিশ্ব মঞ্চে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ‘মানবপুতুল’ নৃত্য: ওসাকা এক্সপোতে যাচ্ছে ক্ষুদে শিল্পীরা পদ্মার ইলিশ কোথায় হারাল? স্বাদের রাজা এখন নাগালের বাইরে জোঁকের তেল: গোপন শক্তি না গোপন বিপদ? কী বলছে চিকিৎসা বিজ্ঞান? “বিয়ের জন্য আপনি প্রস্তুত তো? জেনে নিন চূড়ান্ত আত্মবিশ্লেষণের ৬টি দিক” আজ মানিক মিয়া এভিনিউয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ডিএমপির ডাইভারশন নির্দেশনা—এড়িয়ে চলুন এই সড়কগুলো যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণ বা ব্যবসায়িক ভিসায় নতুন শর্ত: আবেদনেই জমা দিতে হতে পারে ১৮ লাখ টাকার বন্ড টাঙ্গাইলে ছাত্রকে বলাৎকারের অভিযোগে শিক্ষক গ্রেফতার রংপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মামলায় সাবেক কাউন্সিলর ফজলে এলাহী গ্রেফতার বিয়ে ছিল ফাঁদ! ৮ স্বামীকে ফাঁসিয়ে কোটি টাকা হাতানো সামিরা নবম বিয়ের আগেই গ্রেপ্তার প্রেমের ফাঁদে চা, তারপর অজ্ঞান! পাত্রী গ্রেপ্তার, জব্দ হওয়া মোবাইল গেল বাংলাদেশে

সন্তান জন্মের দুদিন পর হাসপাতালের শয্যায় এইচএসসি পরীক্ষা দিলেন শিক্ষার্থী ঈশা

প্রতিবাদী কণ্ঠ
  • আপডেট সময় : ০২:৪৪:০০ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫ ১৬ বার পড়া হয়েছে

সন্তান জন্মের মাত্র দুই দিন পর হাসপাতালের শয্যায় বসেই এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন ঈশা আলম (১৯) নামের এক সাহসী শিক্ষার্থী। স্বামী ও স্বজনদের অনুপ্রেরণায় মনোবল হারাননি তিনি। গর্ভকালীন সময়েই নিয়েছিলেন পরীক্ষার প্রস্তুতি, আর সেই অদম্য ইচ্ছাশক্তিই তাকে পৌঁছে দেয় পরীক্ষার হলে—যদিও সেটি ছিল একটি হাসপাতালের শয্যা।

রোববার (২৯ জুন) শরীয়তপুর শহরের নিপুণ ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড ক্লিনিকের একটি কক্ষে, বিশেষ ব্যবস্থায় বাংলা দ্বিতীয় পত্র পরীক্ষায় অংশ নেন ঈশা। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সরকারি গোলাম হায়দার খান মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ ওয়াজেদ কামাল।

জানা গেছে, শরীয়তপুর পৌরসভার পশ্চিম কাশাভোগ এলাকার বাসিন্দা মাহবুবুর রহমান তুষারের স্ত্রী ঈশা আলম। বর্তমানে তিনি পড়াশোনা করছেন শরীয়তপুর সরকারি কলেজে। চলতি এইচএসসি পরীক্ষার কেন্দ্র ছিল সরকারি গোলাম হায়দার খান মহিলা কলেজ।

গত বৃহস্পতিবার বাংলা প্রথম পত্র পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার পর শুক্রবার রাত ১১টার দিকে হঠাৎ প্রসব বেদনা শুরু হয়। রাতেই তাকে শহরের বেসরকারি একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে সফল সিজারিয়ানের মাধ্যমে জন্ম নেয় একটি কন্যাসন্তান।

পরবর্তী পরীক্ষাটি ছিল রোববার। সদ্য সন্তান জন্মদানের পরপরই পরীক্ষায় অংশ নেওয়া ঈশার পক্ষে খুবই চ্যালেঞ্জিং হয়ে দাঁড়ায়। বিষয়টি লিখিতভাবে কলেজ কর্তৃপক্ষকে জানালে, আবেদনের ভিত্তিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও বোর্ডের নিয়ম অনুসরণ করে ঈশার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়। হাসপাতালের কক্ষে নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে ছিলেন একজন শিক্ষিকা ও একজন নারী পুলিশ সদস্য। পরীক্ষার সময় সদ্যোজাত কন্যাসন্তানটি ছিল তার দাদির কোলে।

ঈশা বলেন, “সন্তান গর্ভে থাকতেই আমি প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। কঠিন সময় এলেও মনোবল হারাইনি। পরিবারের সহায়তা ও সাহস আমাকে পরীক্ষায় বসার শক্তি দিয়েছে। আমি বিশ্বাস করি, প্রতিটি মেয়ে চাইলে সবকিছু জয় করতে পারে।”

সরকারি গোলাম হায়দার খান মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ ওয়াজেদ কামাল বলেন, “একজন মায়ের অদম্য প্রচেষ্টাকে সম্মান জানিয়ে আমরা তার জন্য বিশেষ ব্যবস্থায় পরীক্ষা গ্রহণ করি। মানবিক বিবেচনায় আমরা চাই, সে যেন উচ্চশিক্ষায় এগিয়ে যেতে পারে এবং দেশের একজন ভালো নাগরিক হিসেবে গড়ে ওঠে।”

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

সন্তান জন্মের দুদিন পর হাসপাতালের শয্যায় এইচএসসি পরীক্ষা দিলেন শিক্ষার্থী ঈশা

আপডেট সময় : ০২:৪৪:০০ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫

সন্তান জন্মের মাত্র দুই দিন পর হাসপাতালের শয্যায় বসেই এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন ঈশা আলম (১৯) নামের এক সাহসী শিক্ষার্থী। স্বামী ও স্বজনদের অনুপ্রেরণায় মনোবল হারাননি তিনি। গর্ভকালীন সময়েই নিয়েছিলেন পরীক্ষার প্রস্তুতি, আর সেই অদম্য ইচ্ছাশক্তিই তাকে পৌঁছে দেয় পরীক্ষার হলে—যদিও সেটি ছিল একটি হাসপাতালের শয্যা।

রোববার (২৯ জুন) শরীয়তপুর শহরের নিপুণ ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড ক্লিনিকের একটি কক্ষে, বিশেষ ব্যবস্থায় বাংলা দ্বিতীয় পত্র পরীক্ষায় অংশ নেন ঈশা। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সরকারি গোলাম হায়দার খান মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ ওয়াজেদ কামাল।

জানা গেছে, শরীয়তপুর পৌরসভার পশ্চিম কাশাভোগ এলাকার বাসিন্দা মাহবুবুর রহমান তুষারের স্ত্রী ঈশা আলম। বর্তমানে তিনি পড়াশোনা করছেন শরীয়তপুর সরকারি কলেজে। চলতি এইচএসসি পরীক্ষার কেন্দ্র ছিল সরকারি গোলাম হায়দার খান মহিলা কলেজ।

গত বৃহস্পতিবার বাংলা প্রথম পত্র পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার পর শুক্রবার রাত ১১টার দিকে হঠাৎ প্রসব বেদনা শুরু হয়। রাতেই তাকে শহরের বেসরকারি একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে সফল সিজারিয়ানের মাধ্যমে জন্ম নেয় একটি কন্যাসন্তান।

পরবর্তী পরীক্ষাটি ছিল রোববার। সদ্য সন্তান জন্মদানের পরপরই পরীক্ষায় অংশ নেওয়া ঈশার পক্ষে খুবই চ্যালেঞ্জিং হয়ে দাঁড়ায়। বিষয়টি লিখিতভাবে কলেজ কর্তৃপক্ষকে জানালে, আবেদনের ভিত্তিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও বোর্ডের নিয়ম অনুসরণ করে ঈশার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়। হাসপাতালের কক্ষে নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে ছিলেন একজন শিক্ষিকা ও একজন নারী পুলিশ সদস্য। পরীক্ষার সময় সদ্যোজাত কন্যাসন্তানটি ছিল তার দাদির কোলে।

ঈশা বলেন, “সন্তান গর্ভে থাকতেই আমি প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। কঠিন সময় এলেও মনোবল হারাইনি। পরিবারের সহায়তা ও সাহস আমাকে পরীক্ষায় বসার শক্তি দিয়েছে। আমি বিশ্বাস করি, প্রতিটি মেয়ে চাইলে সবকিছু জয় করতে পারে।”

সরকারি গোলাম হায়দার খান মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ ওয়াজেদ কামাল বলেন, “একজন মায়ের অদম্য প্রচেষ্টাকে সম্মান জানিয়ে আমরা তার জন্য বিশেষ ব্যবস্থায় পরীক্ষা গ্রহণ করি। মানবিক বিবেচনায় আমরা চাই, সে যেন উচ্চশিক্ষায় এগিয়ে যেতে পারে এবং দেশের একজন ভালো নাগরিক হিসেবে গড়ে ওঠে।”