খাগড়াছড়িতে কোরবানির বাজারে ছোট ও মাঝারি গরুর চাহিদা তুঙ্গে, বড় গরুর বিক্রি কম

- আপডেট সময় : ০৫:০২:০৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ জুন ২০২৫ ৭৪ বার পড়া হয়েছে
কোরবানির ঈদ সামনে রেখে জমে উঠেছে খাগড়াছড়ির কোরবানির পশুর হাট। জেলার ২৬টি হাটে এখন ক্রেতা-বিক্রেতার ভিড়ে সরগরম পরিবেশ। তবে এ বছর ক্রেতাদের পছন্দের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে ছোট ও মাঝারি আকারের গরু। চাহিদা অনুযায়ী এসব গরুর বিক্রি ভালো হলেও বড় গরু বিক্রিতে ধাক্কা খেয়েছেন অনেক খামারি ও মৌসুমি ব্যবসায়ী। দাম অনুযায়ী প্রত্যাশিত ক্রেতা না পাওয়ায় অনেকে অপেক্ষা করছেন শেষ মুহূর্তের হাটের জন্য।
জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে খামারি ও কৃষকেরা নানা ধরনের গরু নিয়ে হাজির হচ্ছেন হাটে। দুপুর গড়াতেই হাটগুলোতে জমে উঠছে বেচাকেনা। ক্রেতারা ঘন্টার পর ঘন্টা হাটে ঘুরে নিজেদের বাজেট ও পছন্দ অনুযায়ী কোরবানির পশু খুঁজে নিচ্ছেন।
স্থানীয় খামারি ও কৃষকদের অভিযোগ, গত বছরের তুলনায় খড়, কুড়া ও অন্যান্য খাদ্য উপকরণের দাম বাড়লেও গরু বিক্রিতে তারা ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন না। এতে লোকসানের আশঙ্কায় ভুগছেন অনেকে।
জেলার কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ছোট আকারের গরু ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকায়, মাঝারি আকারের গরু ৯০ হাজার থেকে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকায় এবং বড় গরু ১ লাখ ২০ হাজার থেকে আড়াই লাখ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারের গতি বুঝে কেউ কেউ এখনই পছন্দের গরু কিনে নিচ্ছেন, আবার অনেক ক্রেতা অপেক্ষা করছেন ঈদের ঠিক আগের দিনের জন্য।
বাজারের ইজারাদার মো. কামাল হোসেন জানান, জেলার কোরবানির হাটগুলোতে ক্রমেই বেচাকেনা বাড়ছে। সমতলের বিভিন্ন জেলায় খাগড়াছড়ির গরুর বাড়তি চাহিদা রয়েছে, কারণ এখানকার গরুগুলো প্রাকৃতিকভাবে ও অ্যান্টিবায়োটিকমুক্তভাবে লালন-পালন করা হয়। পশুর সরবরাহও পর্যাপ্ত হওয়ায় জেলার চাহিদা মিটিয়ে প্রতিদিন বাইরে যাচ্ছে কোরবানির পশু।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সুর্পণা দে জানান, জেলার ৯টি উপজেলায় ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ৩ হাজার খামার রয়েছে। শুধু বড় খামার নয়, গ্রামের অনেক কৃষক পরিবারও গড়ে ৩-৪টি করে গরু প্রস্তুত রেখেছে কোরবানির জন্য।
জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর জেলায় কোরবানির জন্য প্রস্তুত রয়েছে মোট ১৯ হাজার ১৬০টি পশু। এর মধ্যে গরু ১২ হাজার ৮১০টি, মহিষ ১৫টি, ছাগল ৬ হাজার ১১০টি এবং ভেড়া ৮০টি। জেলার চাহিদা মিটিয়েও প্রায় ১ হাজার ১৬০টি পশু উদ্বৃত্ত থাকবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। পাশাপাশি হাটে গরুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ভেটেরিনারি মেডিকেল টিমও রয়েছে, যাতে ক্রেতারা সুস্থ-সবল পশু কিনতে পারেন।
জেলার পুলিশ সুপার আরিফিন জুয়েল জানান, কোরবানির পশুবাহী ট্রাক ও বিক্রেতারা যাতে কোনো ধরনের চাঁদাবাজি বা হয়রানির শিকার না হন, সেজন্য পুলিশ প্রশাসন সতর্ক রয়েছে। জাল টাকার ব্যবহার রোধেও নেওয়া হয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা।
জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগের হিসাব অনুযায়ী, গত বছর খাগড়াছড়িতে কোরবানির পশু কাটা হয়েছিল প্রায় ১৫ হাজার। এ বছর সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৯ হাজারের বেশি। শেষ মুহূর্তে হাটে পশুর দাম আরও বাড়বে বলে আশা করছেন খামারি ও ইজারাদারেরা।