ফেনীতে ভয়াবহ বন্যা: ৫০ গ্রাম প্লাবিত, ৫ হাজারের বেশি মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে

- আপডেট সময় : ১১:১৬:৫২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫ ৩৫ বার পড়া হয়েছে
ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল এবং অব্যাহত বৃষ্টিতে মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও নদী তীরবর্তী বাঁধ ভেঙে ফেনীর অন্তত ৫০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে ফুলগাজী, পরশুরাম, ছাগলনাইয়া ও ফেনী সদর উপজেলার প্রায় ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে আশ্রয় নিয়েছেন ৫ হাজার ৭৭৬ জন মানুষ।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) সকালে জেলা প্রশাসন নিশ্চিত করে জানায়, এ পর্যন্ত ৪৮টি আশ্রয়কেন্দ্রে ১ হাজার ৫৯৩টি পরিবারের সদস্যরা অবস্থান করছেন। বন্যার প্রকোপ বাড়ায় জেলার ১৫৩টি আশ্রয়কেন্দ্র চালু করা হয়েছে, যার মধ্যে ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলায় ১৩১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
🔻 বাঁধে ভাঙন, অব্যাহত পানি প্রবাহ
পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, পরশুরামে ১২টি, ফুলগাজীতে ৮টি ও অন্যান্য এলাকায় মোট ২০টি স্থানে নদীর বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। মুহুরী নদীর ১০টি, কহুয়া নদীর ৬টি এবং সিলোনিয়া নদীর ৪টি অংশে ভাঙনের ফলে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করেছে। এতে বহু মানুষ বাধ্য হয়ে ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন।
⚡ বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন, যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন
বন্যার কারণে জেলার বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ফেনী-পরশুরাম আঞ্চলিক সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। তবে কিছু মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ট্রাক ও পিকআপে চলাচল করছেন।
💬 প্রশাসনের প্রস্তুতি ও সহায়তা
জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, দুর্যোগ মোকাবিলায় ১৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা ও ১২০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ফুলগাজী ও পরশুরামে ৪০০ প্যাকেট শুকনো খাবার পাঠানো হয়েছে। জেলাজুড়ে ২ হাজার ৫৪৭ জন প্রশিক্ষিত স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখা হয়েছে এবং একটি কন্ট্রোল রুম চালু করা হয়েছে।
☔ আবহাওয়ার পূর্বাভাস
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ফেনীতে ৫৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। তবে আগামী ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাত কিছুটা কমার সম্ভাবনা রয়েছে, এতে করে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে বলে আশাবাদ প্রকাশ করা হয়েছে।
আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মজিবুর রহমান বলেন,
“হালদা নদীর পানিও এখন বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে, তবে ভারী বর্ষণ অব্যাহত থাকলে সতর্কতা বজায় রাখতে হবে।”
পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী আখতার হোসেন বলেন,
“ভারতের ত্রিপুরায় বৃষ্টিপাত চলমান থাকায় নদীতে পানি বাড়ার সম্ভাবনা আছে, নতুন করে বাঁধ ভাঙনেরও ঝুঁকি রয়েছে।”