ভ্রমণপ্রেমী নাদিরের হতাশা: এক বছরে ১৭ দেশে আবেদন, ৭টি ভিসা প্রত্যাখ্যান

- আপডেট সময় : ০৮:৩৪:৪১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩০ জুলাই ২০২৫ ২৫ বার পড়া হয়েছে
বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় ভ্রমণবিষয়ক কনটেন্ট ক্রিয়েটর নাদির নিবরাস সম্প্রতি প্রকাশিত এক ভিডিওবার্তায় জানিয়েছেন, গত এক বছরে তিনি বিশ্বের ১৭টি দেশে ভ্রমণের উদ্দেশ্যে ভিসার জন্য আবেদন করেছিলেন। তবে এর মধ্যে ৭টি দেশ তাকে ভিসা দেয়নি। আরও বিস্ময়কর বিষয় হলো—পূর্বে যেসব দেশ তাকে একাধিকবার ভিসা দিয়েছে, সেগুলোর মধ্যে তিনটিও এবার তার আবেদন প্রত্যাখ্যান করেছে।
রোববার (২৭ জুলাই) ইউটিউবে ‘নাদির অন দ্য গো’ শিরোনামের চ্যানেলে একটি ভিডিও প্রকাশ করেন নাদির। পরদিন সোমবার তিনি ফেসবুকে লেখেন, “আমি গত এক বছরে ১৭টি দেশের ট্যুরিস্ট ভিসার জন্য আবেদন করেছি। এর মধ্যে ৭টি দেশ আমাকে ভিসা দেয়নি। এমনকি তিনটি দেশ, যারা আগেও আমাকে ভিসা দিয়েছিল, তারাও এবার রিজেক্ট করেছে। এটা প্রমাণ করে আমাদের পাসপোর্ট দিন দিন দুর্বল হয়ে পড়ছে।”
ভিসা প্রাপ্তি ও প্রত্যাখ্যানের অভিজ্ঞতা
ভিডিওতে নাদির উল্লেখ করেন, ২০২৪ সালে দুবাইয়ের ভিসা পেয়েছিলেন ১৭ হাজার টাকা খরচে। ইস্তাম্বুলের ই-ভিসাও সহজেই পেয়েছিলেন মাত্র ৬০ ডলার খরচে। কাতারের ই-ভিসা পেতে খরচ পড়ে ২৭ ডলার, তবে এবার সেই আবেদন প্রত্যাখ্যান করা হয়। বাহারাইনের ক্ষেত্রেও একই অভিজ্ঞতা হয়। যদিও যুক্তরাষ্ট্র ও শেনজেন ভিসা থাকলে এসব দেশে ভিসা পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
ইন্দোনেশিয়ায় একসময় অন-অ্যারাইভাল ভিসা থাকলেও বর্তমানে বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীরা সে সুবিধা পাচ্ছেন না। শ্রীলঙ্কা সহজেই ভিসা দিয়েছে, তবে কম্বোডিয়া, ভিয়েতনাম ও থাইল্যান্ডের ভিসা প্রক্রিয়া আগের তুলনায় এখন অনেক কঠিন হয়ে পড়েছে।
ইউরোপীয় ও মধ্যপ্রাচ্যের কঠোরতা
ইতালির ক্ষেত্রে নাদির বলেন, “অনেক বাংলাদেশি অবৈধভাবে ইতালিতে বসবাস করে। এ কারণে এখন দেশটি আমাদের নাগরিকদের জন্য ভিসা প্রায় বন্ধ করে দিয়েছে।” একইভাবে তাজিকিস্তান, উজবেকিস্তান, কিরগিস্তানসহ মধ্যএশিয়ার দেশগুলোতেও বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা পাওয়া কঠিন হয়ে গেছে।
শেনজেন ভিসার জন্য সুইডিশ অ্যাম্বাসির মাধ্যমে নেদারল্যান্ডস ভ্রমণের আবেদন করলেও সেটিও প্রত্যাখ্যান করা হয়। আর যুক্তরাজ্যের ভিসার জন্য আবেদন করে দীর্ঘ প্রক্রিয়ার পর সব ডকুমেন্ট জমা দিলেও প্রায় ৮৯০ ডলারের খরচে সেই আবেদনও ঝুলে যায়।
অভিযোগ ও আশঙ্কা
নাদির বলেন, “আজকাল অনেক দেশেই বাংলাদেশিদের নিয়ে নেতিবাচক ধারণা তৈরি হয়েছে। অনেকেই ভ্রমণের নামে থেকে যায়, রাজনৈতিক আশ্রয় চায় বা ভুয়া তথ্য দেয়। এর ফলে আমাদের মতো সাধারণ ভ্রমণপ্রেমীরাও এর প্রভাব ভোগ করি।”
তিনি আরও বলেন, “আমার ভিডিওটি শুধু ভিসা জার্নি নয়, বরং একটি চিত্র—যেখানে দেখা যাচ্ছে আমাদের পাসপোর্ট কতটা অকার্যকর হয়ে পড়েছে, আর ভ্রমণের সুযোগগুলো কিভাবে সংকুচিত হচ্ছে।”
আশার আলো
সবচেয়ে ইতিবাচক দিক হিসেবে নাদির জানান, তিমোর-লেস্তে তাকে অন-অ্যারাইভাল ভিসা দিয়েছে এবং অস্ট্রেলিয়া তিন বছরের ট্যুরিস্ট ভিসা দিয়েছে মাত্র ১৭০ ডলারে। এই অভিজ্ঞতা তাকে আশাবাদী করে তুলেছে।