সর্বশেষ
বিশ্ব মঞ্চে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ‘মানবপুতুল’ নৃত্য: ওসাকা এক্সপোতে যাচ্ছে ক্ষুদে শিল্পীরা পদ্মার ইলিশ কোথায় হারাল? স্বাদের রাজা এখন নাগালের বাইরে জোঁকের তেল: গোপন শক্তি না গোপন বিপদ? কী বলছে চিকিৎসা বিজ্ঞান? “বিয়ের জন্য আপনি প্রস্তুত তো? জেনে নিন চূড়ান্ত আত্মবিশ্লেষণের ৬টি দিক” আজ মানিক মিয়া এভিনিউয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ডিএমপির ডাইভারশন নির্দেশনা—এড়িয়ে চলুন এই সড়কগুলো যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণ বা ব্যবসায়িক ভিসায় নতুন শর্ত: আবেদনেই জমা দিতে হতে পারে ১৮ লাখ টাকার বন্ড টাঙ্গাইলে ছাত্রকে বলাৎকারের অভিযোগে শিক্ষক গ্রেফতার রংপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মামলায় সাবেক কাউন্সিলর ফজলে এলাহী গ্রেফতার বিয়ে ছিল ফাঁদ! ৮ স্বামীকে ফাঁসিয়ে কোটি টাকা হাতানো সামিরা নবম বিয়ের আগেই গ্রেপ্তার প্রেমের ফাঁদে চা, তারপর অজ্ঞান! পাত্রী গ্রেপ্তার, জব্দ হওয়া মোবাইল গেল বাংলাদেশে

বাংলায় কথা বললেই ‘বাংলাদেশি’ অপবাদ! ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে আটক বাঙালিরা, মোদির হস্তক্ষেপ চাইলেন মমতা

প্রতিবাদী কণ্ঠ
  • আপডেট সময় : ০৬:৫২:০২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫ ৩৬ বার পড়া হয়েছে

বিস্তারিত প্রতিবেদন:
ভারতে বাংলা ভাষায় কথা বললেই মানুষকে ‘বাংলাদেশি’ আখ্যা দিয়ে আটক কিংবা জোরপূর্বক বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হচ্ছে—এমন গুরুতর অভিযোগ তুলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরাসরি হস্তক্ষেপ চেয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

তিনি অভিযোগ করেছেন, আসাম, ওড়িশা, রাজস্থান, মহারাষ্ট্র ও দিল্লিসহ বিভিন্ন রাজ্যে বাংলা ভাষাভাষী মানুষদের পরিকল্পিতভাবে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করা হচ্ছে। শুধুমাত্র বাংলায় কথা বলার কারণে বহু নিরপরাধ মানুষকে বিদেশি বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে।

সম্প্রতি ভারতের রাজধানী দিল্লির বসন্তকুঞ্জ এলাকার এক বাঙালি পাড়ায় পানির সংযোগ ও বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার ঘটনা দেশটির গণমাধ্যমে আলোচিত হয়েছে। এমন আচরণকে বাঙালি বিদ্বেষ হিসেবে দেখছেন অনেকে।

আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা সম্প্রতি এক বিতর্কিত বক্তব্যে বলেন, “গণনাতে কেউ যদি বাংলা ভাষাকে মাতৃভাষা হিসেবে উল্লেখ করেন, তাহলে তাকে বিদেশি হিসেবে চিহ্নিত করা হবে।” তার এই বক্তব্য ঘিরে দেশজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।

এ অবস্থায় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এক চিঠির মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। চিঠিতে তিনি লেখেন, “বাংলায় কথা বললেই বাংলাদেশি ট্যাগ লাগিয়ে মানুষকে আটক করা হচ্ছে বা বাংলাদেশে পুশব্যাক করা হচ্ছে—এটা অসাংবিধানিক এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের শামিল।”

ওড়িশায় পরিস্থিতি আরও উদ্বেগজনক। রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় গত কয়েকদিনে অন্তত ৩৫০ জন বাংলা ভাষাভাষী মানুষকে শুধুমাত্র ভাষাগত কারণে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

বিজেপি-বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো বিষয়টি নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। তাদের দাবি, ভারতের বহুভাষিক ও বহুসাংস্কৃতিক চরিত্রকে নষ্ট করার ষড়যন্ত্র চলছে। ভাষার ভিত্তিতে বৈষম্য সৃষ্টি করে গোটা জাতিকে বিভক্ত করার চেষ্টা চলছে বলেও অভিযোগ করেছেন তারা।

মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, ভাষাগত পরিচয়কে কেন্দ্র করে মানুষকে বিদেশি হিসেবে চিহ্নিত করা একধরনের জাতিগত নিপীড়ন। বাংলা ভারতের অন্যতম প্রাচীন ও বৃহৎ ভাষা। এই ভাষার ব্যবহারকারীদের সঙ্গে এমন আচরণ ভারতের সাংবিধানিক মূল্যবোধের পরিপন্থী।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বিষয়টি শুধু রাজনৈতিক নয়—মানবিক ও সাংস্কৃতিক সংকটের ইঙ্গিত বহন করে। ভাষাগত বৈচিত্র্যকে রক্ষা না করলে তা ভবিষ্যতে বড় সামাজিক অস্থিরতার জন্ম দিতে পারে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

বাংলায় কথা বললেই ‘বাংলাদেশি’ অপবাদ! ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে আটক বাঙালিরা, মোদির হস্তক্ষেপ চাইলেন মমতা

আপডেট সময় : ০৬:৫২:০২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫

বিস্তারিত প্রতিবেদন:
ভারতে বাংলা ভাষায় কথা বললেই মানুষকে ‘বাংলাদেশি’ আখ্যা দিয়ে আটক কিংবা জোরপূর্বক বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হচ্ছে—এমন গুরুতর অভিযোগ তুলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরাসরি হস্তক্ষেপ চেয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

তিনি অভিযোগ করেছেন, আসাম, ওড়িশা, রাজস্থান, মহারাষ্ট্র ও দিল্লিসহ বিভিন্ন রাজ্যে বাংলা ভাষাভাষী মানুষদের পরিকল্পিতভাবে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করা হচ্ছে। শুধুমাত্র বাংলায় কথা বলার কারণে বহু নিরপরাধ মানুষকে বিদেশি বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে।

সম্প্রতি ভারতের রাজধানী দিল্লির বসন্তকুঞ্জ এলাকার এক বাঙালি পাড়ায় পানির সংযোগ ও বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার ঘটনা দেশটির গণমাধ্যমে আলোচিত হয়েছে। এমন আচরণকে বাঙালি বিদ্বেষ হিসেবে দেখছেন অনেকে।

আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা সম্প্রতি এক বিতর্কিত বক্তব্যে বলেন, “গণনাতে কেউ যদি বাংলা ভাষাকে মাতৃভাষা হিসেবে উল্লেখ করেন, তাহলে তাকে বিদেশি হিসেবে চিহ্নিত করা হবে।” তার এই বক্তব্য ঘিরে দেশজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।

এ অবস্থায় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এক চিঠির মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। চিঠিতে তিনি লেখেন, “বাংলায় কথা বললেই বাংলাদেশি ট্যাগ লাগিয়ে মানুষকে আটক করা হচ্ছে বা বাংলাদেশে পুশব্যাক করা হচ্ছে—এটা অসাংবিধানিক এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের শামিল।”

ওড়িশায় পরিস্থিতি আরও উদ্বেগজনক। রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় গত কয়েকদিনে অন্তত ৩৫০ জন বাংলা ভাষাভাষী মানুষকে শুধুমাত্র ভাষাগত কারণে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

বিজেপি-বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো বিষয়টি নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। তাদের দাবি, ভারতের বহুভাষিক ও বহুসাংস্কৃতিক চরিত্রকে নষ্ট করার ষড়যন্ত্র চলছে। ভাষার ভিত্তিতে বৈষম্য সৃষ্টি করে গোটা জাতিকে বিভক্ত করার চেষ্টা চলছে বলেও অভিযোগ করেছেন তারা।

মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, ভাষাগত পরিচয়কে কেন্দ্র করে মানুষকে বিদেশি হিসেবে চিহ্নিত করা একধরনের জাতিগত নিপীড়ন। বাংলা ভারতের অন্যতম প্রাচীন ও বৃহৎ ভাষা। এই ভাষার ব্যবহারকারীদের সঙ্গে এমন আচরণ ভারতের সাংবিধানিক মূল্যবোধের পরিপন্থী।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বিষয়টি শুধু রাজনৈতিক নয়—মানবিক ও সাংস্কৃতিক সংকটের ইঙ্গিত বহন করে। ভাষাগত বৈচিত্র্যকে রক্ষা না করলে তা ভবিষ্যতে বড় সামাজিক অস্থিরতার জন্ম দিতে পারে।