সর্বশেষ
বিশ্ব মঞ্চে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ‘মানবপুতুল’ নৃত্য: ওসাকা এক্সপোতে যাচ্ছে ক্ষুদে শিল্পীরা পদ্মার ইলিশ কোথায় হারাল? স্বাদের রাজা এখন নাগালের বাইরে জোঁকের তেল: গোপন শক্তি না গোপন বিপদ? কী বলছে চিকিৎসা বিজ্ঞান? “বিয়ের জন্য আপনি প্রস্তুত তো? জেনে নিন চূড়ান্ত আত্মবিশ্লেষণের ৬টি দিক” আজ মানিক মিয়া এভিনিউয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ডিএমপির ডাইভারশন নির্দেশনা—এড়িয়ে চলুন এই সড়কগুলো যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণ বা ব্যবসায়িক ভিসায় নতুন শর্ত: আবেদনেই জমা দিতে হতে পারে ১৮ লাখ টাকার বন্ড টাঙ্গাইলে ছাত্রকে বলাৎকারের অভিযোগে শিক্ষক গ্রেফতার রংপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মামলায় সাবেক কাউন্সিলর ফজলে এলাহী গ্রেফতার বিয়ে ছিল ফাঁদ! ৮ স্বামীকে ফাঁসিয়ে কোটি টাকা হাতানো সামিরা নবম বিয়ের আগেই গ্রেপ্তার প্রেমের ফাঁদে চা, তারপর অজ্ঞান! পাত্রী গ্রেপ্তার, জব্দ হওয়া মোবাইল গেল বাংলাদেশে

নরসিংদীতে টেক্সটাইল যন্ত্রপাতি আমদানির নামে কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি

প্রতিবাদী কণ্ঠ
  • আপডেট সময় : ০৮:৫৫:৪২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ জুলাই ২০২৫ ১৫ বার পড়া হয়েছে

নরসিংদীর মাধবদী, চৌলা, শেখেরচর, সাহেপ্রতাব এবং শিবপুর—এই শিল্পাঞ্চলগুলোতে টেক্সটাইল যন্ত্রপাতি আমদানির আড়ালে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকির একটি সংঘবদ্ধ চক্র সক্রিয় রয়েছে বলে উঠে এসেছে তদন্তে।

বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, একাধিক প্রভাবশালী ব্যবসায়ী বিদেশ থেকে পাওয়ার লুম, বয়লার ও অন্যান্য টেক্সটাইল মেশিনারিজ এলসি (লেটার অব ক্রেডিট) খোলার মাধ্যমে আমদানি করেন। কাগজে-কলমে এসব যন্ত্রপাতি তাদের নিজস্ব কারখানার জন্য দেখানো হলেও, বাস্তবে তা বিক্রি করে দেওয়া হয় অন্য কারখানার মালিকদের কাছে। এতে একদিকে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, অন্যদিকে গড়ে উঠছে অস্বচ্ছ আর্থিক চক্র।

এই ব্যবসায়ীদের একটি অংশ, যারা ‘এলসি ব্যবসায়ী’ হিসেবে পরিচিত, প্রকৃত উৎপাদনে ব্যবহারের উদ্দেশ্যে আমদানি দেখিয়ে চোরাইভাবে পণ্য বাজারজাত করছে। খোলাবাজারে বিক্রির ফলে সরকারের আমদানি শুল্ক, ভ্যাট, অগ্রিম আয়করসহ একাধিক কর ফাঁকি দেওয়া হচ্ছে, যা রাষ্ট্রীয় অর্থনীতির জন্য হুমকিস্বরূপ।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এবং দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সূত্র জানিয়েছে, ইতোমধ্যেই অন্তত এক ডজন ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে। কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে এবং কয়েকটি মামলার শুনানিও ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এ ধরনের এলসি জালিয়াতি শুধু আর্থিক নয়, বরং এটি জাতীয় নিরাপত্তা ও শিল্পনীতির বিরুদ্ধেও বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ। তারা বলেন, টেক্সটাইল শিল্প দেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ রপ্তানিমুখী খাত হলেও এভাবে সুযোগ গ্রহণকারীরা সৎ ব্যবসায়ীদের জন্যও হুমকি তৈরি করছে।

নরসিংদীর একটি অনুসন্ধানী সংবাদমাধ্যমের হাতে থাকা প্রাথমিক তথ্যপ্রমাণে দেখা গেছে, এলসি খোলার পর মেশিন সরাসরি কারখানায় না গিয়ে গোপনে বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে। এসব তথ্য বিশ্লেষণ করে ধাপে ধাপে প্রতিবেদন প্রকাশের প্রস্তুতি চলছে।

জনগণের একাংশ ও শিল্প সংশ্লিষ্টরা দাবি তুলেছেন, এই চক্রকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। একই সঙ্গে ভবিষ্যতে এলসি-নির্ভর আমদানিতে কঠোর যাচাই-বাছাই ও শুল্ক নজরদারি জোরদার করার দাবি উঠেছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

নরসিংদীতে টেক্সটাইল যন্ত্রপাতি আমদানির নামে কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি

আপডেট সময় : ০৮:৫৫:৪২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ জুলাই ২০২৫

নরসিংদীর মাধবদী, চৌলা, শেখেরচর, সাহেপ্রতাব এবং শিবপুর—এই শিল্পাঞ্চলগুলোতে টেক্সটাইল যন্ত্রপাতি আমদানির আড়ালে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকির একটি সংঘবদ্ধ চক্র সক্রিয় রয়েছে বলে উঠে এসেছে তদন্তে।

বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, একাধিক প্রভাবশালী ব্যবসায়ী বিদেশ থেকে পাওয়ার লুম, বয়লার ও অন্যান্য টেক্সটাইল মেশিনারিজ এলসি (লেটার অব ক্রেডিট) খোলার মাধ্যমে আমদানি করেন। কাগজে-কলমে এসব যন্ত্রপাতি তাদের নিজস্ব কারখানার জন্য দেখানো হলেও, বাস্তবে তা বিক্রি করে দেওয়া হয় অন্য কারখানার মালিকদের কাছে। এতে একদিকে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, অন্যদিকে গড়ে উঠছে অস্বচ্ছ আর্থিক চক্র।

এই ব্যবসায়ীদের একটি অংশ, যারা ‘এলসি ব্যবসায়ী’ হিসেবে পরিচিত, প্রকৃত উৎপাদনে ব্যবহারের উদ্দেশ্যে আমদানি দেখিয়ে চোরাইভাবে পণ্য বাজারজাত করছে। খোলাবাজারে বিক্রির ফলে সরকারের আমদানি শুল্ক, ভ্যাট, অগ্রিম আয়করসহ একাধিক কর ফাঁকি দেওয়া হচ্ছে, যা রাষ্ট্রীয় অর্থনীতির জন্য হুমকিস্বরূপ।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এবং দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সূত্র জানিয়েছে, ইতোমধ্যেই অন্তত এক ডজন ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে। কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে এবং কয়েকটি মামলার শুনানিও ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এ ধরনের এলসি জালিয়াতি শুধু আর্থিক নয়, বরং এটি জাতীয় নিরাপত্তা ও শিল্পনীতির বিরুদ্ধেও বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ। তারা বলেন, টেক্সটাইল শিল্প দেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ রপ্তানিমুখী খাত হলেও এভাবে সুযোগ গ্রহণকারীরা সৎ ব্যবসায়ীদের জন্যও হুমকি তৈরি করছে।

নরসিংদীর একটি অনুসন্ধানী সংবাদমাধ্যমের হাতে থাকা প্রাথমিক তথ্যপ্রমাণে দেখা গেছে, এলসি খোলার পর মেশিন সরাসরি কারখানায় না গিয়ে গোপনে বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে। এসব তথ্য বিশ্লেষণ করে ধাপে ধাপে প্রতিবেদন প্রকাশের প্রস্তুতি চলছে।

জনগণের একাংশ ও শিল্প সংশ্লিষ্টরা দাবি তুলেছেন, এই চক্রকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। একই সঙ্গে ভবিষ্যতে এলসি-নির্ভর আমদানিতে কঠোর যাচাই-বাছাই ও শুল্ক নজরদারি জোরদার করার দাবি উঠেছে।