ট্রাম্পের নির্বাহী ক্ষমতা আরও জোরালো করল মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট

- আপডেট সময় : ০১:৩৭:১৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫ ২০ বার পড়া হয়েছে
মার্কিন প্রেসিডেন্টের নির্বাহী আদেশে হস্তক্ষেপের ক্ষেত্রে ফেডারেল আদালতের ক্ষমতা সীমিত করে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট। শুক্রবার (২৭ জুন) দেওয়া এই ঐতিহাসিক রুলিংয়ের ফলে ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে নেওয়া একাধিক বিতর্কিত নীতির বাস্তবায়ন আরও সহজ হয়ে গেল।
বিশেষজ্ঞদের মতে, আদালতের এই সিদ্ধান্ত প্রেসিডেন্টের ক্ষমতার পরিধি বাড়ানোর পাশাপাশি ফেডারেল বিচার বিভাগের ভূমিকা নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করেছে।
জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব বাতিলের পথ সুগম
সুপ্রিম কোর্টের এই রায় সরাসরি জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব বাতিল সংক্রান্ত ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশের বৈধতা নিয়ে নয়। বরং এটি প্রেসিডেন্টের আদেশে হস্তক্ষেপের আইনি কাঠামো নিয়েই সিদ্ধান্ত দিয়েছে। তবে এই রায়ের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট আদেশ কার্যকরের আইনি পথ অনেকটাই পরিষ্কার হয়েছে।
ট্রাম্প প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণের প্রথম দিনেই অবৈধ অভিবাসী ও অস্থায়ী ভিসাধারীদের সন্তানদের জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব বন্ধে একটি নির্বাহী আদেশ জারি করেন। সেই আদেশকে কেন্দ্র করেই ম্যাসাচুসেটস, ম্যারিল্যান্ড ও ওয়াশিংটনসহ ২২টি রাজ্যে একাধিক মামলা হয়।
প্রাথমিকভাবে কিছু ফেডারেল আদালত সেই আদেশ স্থগিত করলেও সুপ্রিম কোর্টের রায়ে বলা হয়েছে, ভবিষ্যতে কোনো প্রেসিডেন্টের আদেশ স্থগিত করার আগে অবশ্যই পূর্ণ বিচার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
ট্রাম্প বললেন ‘বিপুল বিজয়’
রায়ের পর এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প বলেন, “এই রায় আমাদের সংবিধানের বিজয়। নির্বাহী শাখাকে আটকে দেওয়ার চেষ্টা ছিল গণতন্ত্রের জন্য হুমকি। সুপ্রিম কোর্ট আজ সেটি প্রতিহত করেছে।”
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত অ্যাটর্নি জেনারেল পাম বন্ডি বলেন, “এই সিদ্ধান্তের মানে হলো—বিচারকরা আর প্রেসিডেন্টের নীতি এককভাবে আটকে দিতে পারবেন না।”
সুপ্রিম কোর্ট বিভক্ত, বিরোধিতা সোটোমেয়রের
রুলিংয়ে রক্ষণশীল বিচারকরা ট্রাম্পের পক্ষে রায় দিলেও, বিচারপতি সোনিয়া সোটোমেয়র রায়ের তীব্র বিরোধিতা করেছেন। তিনি বলেন, “এই সিদ্ধান্ত সরকারকে সংবিধান উপেক্ষার একটি উন্মুক্ত সুযোগ দিয়েছে। এটি আইনের শাসনের জন্য বিপজ্জনক এক নজির।”
নটরডেম ল স্কুলের অধ্যাপক স্যামুয়েল ব্রে মন্তব্য করেছেন, “এই রুলিং ফেডারেল আদালত ও নির্বাহী বিভাগের মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য নিয়ে মৌলিক প্রশ্ন উত্থাপন করবে।”
আগামী ধাপ কী?
এই আদেশের ফলে ট্রাম্পের জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব বাতিলের সিদ্ধান্ত আগামী ৩০ দিনের মধ্যে কার্যকর হতে পারে, যদি না নতুন কোনো আইনি চ্যালেঞ্জ আসে। অক্টোবরে সুপ্রিম কোর্টের নতুন অধিবেশন শুরুর পর বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত শুনানি হতে পারে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এ সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসনিক কাঠামোতে গভীর প্রভাব ফেলতে পারে এবং ভবিষ্যৎ প্রেসিডেন্টদের জন্যও একধরনের দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।