ইরানে মার্কিন হামলা: তেলের দাম উর্ধ্বমুখী, বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক ঝুঁকি বাড়ছে

- আপডেট সময় : ০৫:৩০:০০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫ ১৩ বার পড়া হয়েছে
সংবাদ বিশ্লেষণ:
ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক বিমান হামলার পর বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক অস্থিরতা বাড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। জ্বালানি তেলের বাজার থেকে শুরু করে মুদ্রানীতি, পুঁজিবাজার, বিনিয়োগ ও মূল্যস্ফীতির ওপর এর সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছেন অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই হামলার ফলে প্রথম ধাক্কা লেগেছে তেলের বাজারে। বিশ্ববাজারে ইতোমধ্যে অপরিশোধিত তেলের দাম বেড়েছে ১৮ শতাংশ। ৫ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ দামে পৌঁছে গেছে ব্রেন্ট ক্রুড—প্রতি ব্যারেল ৭৯ ডলারে। যদি উত্তেজনা আরও বাড়ে এবং ইরান হরমুজ প্রণালি বন্ধ করে দেয় বা তেল রপ্তানি বন্ধে বাধ্য হয়, তাহলে তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ১৩০ ডলারেও পৌঁছাতে পারে বলে সতর্ক করেছেন বিশ্লেষকরা।
এই তেলের দাম বৃদ্ধির সরাসরি প্রভাব পড়বে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রায়। পণ্যের দাম বাড়বে, পরিবহন খরচ বাড়বে, এবং মূল্যস্ফীতি ছড়িয়ে পড়বে বিশ্বজুড়ে। এতে করে অনেক দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিশেষ করে মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভ, সুদের হার কমানোর পথ থেকে সরে আসতে পারে। যার ফলে বিনিয়োগের গতি কমে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, এই সংঘাত কোন দিকে মোড় নেয় তা অনিশ্চিত হলেও এর জেরে পুঁজিবাজারে বড় ধরনের চাপ আসতে পারে। অনেক বিনিয়োগকারী নিরাপদ বিনিয়োগমাধ্যম—যেমন স্বর্ণ ও ডলারের দিকে ঝুঁকতে পারেন।
তবে এখানেও দ্বিধা রয়েছে। কারণ, চলতি বছরে যুক্তরাষ্ট্রের ভূরাজনৈতিক অবস্থান ও নেতৃত্ব নিয়ে বিশ্বজুড়ে যে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, তার কারণে ডলারের মান ইতিমধ্যেই উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। তারপরও, সংকটকালে স্বল্পমেয়াদে ডলারের প্রতি চাহিদা বাড়তে পারে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, সোমবার (২৩ জুন) সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসেই এর প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া দেখা যেতে পারে আন্তর্জাতিক বাজারে। ইরানের পাল্টা প্রতিক্রিয়া এবং যুদ্ধ কতটা দীর্ঘায়িত হয়, তার উপর নির্ভর করবে ভবিষ্যতের অর্থনৈতিক চিত্র।
সারকথা:
মার্কিন-ইরান উত্তেজনা এখন আর শুধু মধ্যপ্রাচ্যের সীমিত রাজনৈতিক ইস্যু নয়, এটি সরাসরি প্রভাব ফেলতে যাচ্ছে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক ভারসাম্যে। মূল্যস্ফীতি, জ্বালানি সংকট ও বিনিয়োগ স্থবিরতার ভয় এখন একেবারে চোখের সামনে।