ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে দুর্ভোগ বাড়ছেই, ছয় লেনের কাজ ধীরগতিতে

- আপডেট সময় : ০৭:৫৩:৫৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫ ৩৩ বার পড়া হয়েছে
ঢাকা থেকে সিলেটগামী মহাসড়কে যাত্রী ও চালকদের ভোগান্তি দিন দিন বেড়েই চলেছে। কোথাও বড় গর্ত, আবার কোথাও পিচ উঠে গিয়ে বেরিয়ে এসেছে নিচের মোটা পাথর। এর ফলে যানবাহনের গতি কমে গিয়ে সৃষ্টি হচ্ছে দীর্ঘ যানজট, বাড়ছে দুর্ঘটনার আশঙ্কাও। ছয় লেনের নির্মাণ কাজ চলায় সড়ক ও জনপথ (সওজ) কর্তৃপক্ষ ভাঙাচোরা সড়কে তেমন মেরামতও করছে না।
সওজ এবং প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দাবি, মূল সড়কে বর্তমানে উন্নয়ন কাজ হচ্ছে না; বরং রাস্তার দুপাশে ব্রিজ, কালভার্ট নির্মাণের মতো কাজ চলছে।
গত বৃহস্পতিবার সিলেটগামী এক বৃদ্ধ যাত্রী ইসমাইল হোসেন জানান, এখন এই রাস্তায় যাতায়াত মানেই বিপদের মুখে পা রাখা। কখন পৌঁছাবেন, সেটার কোনো নিশ্চয়তা নেই। রাস্তাজুড়ে খানাখন্দ, একেক জায়গায় থেমে থাকা যানজট—সব মিলিয়ে প্রায় অসহনীয় অবস্থা।
বিশ্বরোড মোড়সহ আশুগঞ্জ-সরাইল পর্যন্ত প্রায় ১২ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে সড়কের অবস্থা সবচেয়ে করুণ। এখানকার গর্ত ও ভাঙাচোরা অংশে গাড়ির গতি ঘণ্টায় ১০ কিমি পর্যন্ত নেমে আসে বলে জানায় স্থানীয় বাসচালকরা। ফলে এ অংশে যানজট নিত্যদিনের দৃশ্য।
চালক আব্দুর রহমান বলেন, “রাস্তার দুরবস্থা, একটানা কাজ চলা, আর বাজার-দোকানের জন্য সড়ক দখলই সবচেয়ে বড় সমস্যা। এ কারণে যানজট লেগেই থাকে।”
এ বিষয়ে সওজ সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী আমির হোসেন বলেন, “পুরোনো সড়কে এখন বেশি ব্যয় করা হচ্ছে না, কারণ এটি নতুন করে ছয় লেনে নির্মাণ করা হচ্ছে। চলাচল সচল রাখতে যতটুকু জরুরি, সেই সংস্কারই করা হচ্ছে।”
প্রকল্পের অগ্রগতি খুব বেশি নয়। সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে ছয় লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্প শুরু হলেও এখন পর্যন্ত কাজ হয়েছে মাত্র ১৫-১৬ শতাংশ। জমি অধিগ্রহণে নানা জটিলতা থাকায় কাজ হয়েছে ধীরগতিতে। বর্তমানে শুধু ব্রিজ ও কালভার্ট নির্মাণের কাজ চালানো হচ্ছে।
প্রকল্পের সিলেট অংশের প্রজেক্ট ম্যানেজার দেবাশীষ রায় জানান, “ভূমি অধিগ্রহণ সমস্যা আগের তুলনায় অনেকটাই কেটে গেছে। তাই এখন দ্রুতগতিতে কাজ এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চলছে।”
প্রকল্প অনুযায়ী, কাঁচপুর থেকে সিলেট পর্যন্ত ২০৯ কিমি এবং সিলেট থেকে তামাবিল পর্যন্ত ৫৬.১৬ কিমি সড়ক উন্নয়নের কথা। প্রকল্পের নির্ধারিত সময়সীমা শেষ হবে ২০২৬ সালের ডিসেম্বরে, তবে সংশ্লিষ্টদের ধারণা— সময়মতো কাজ শেষ হবে না।
একইসঙ্গে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অন্তত ৪ কিমি মহাসড়কে বড় গর্ত তৈরি হয়েছে, যা নিয়মিত সংস্কার কাজ না হওয়ার কারণেই হয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
চার লেন প্রকল্পের ব্যবস্থাপক মো. শামীম আহমেদ জানান, “বর্তমানে আমরা টার্গেট অনুযায়ী কাজ করছি। ৬৫ শতাংশ কাজ ইতোমধ্যেই শেষ হয়েছে। তবে প্রকল্প সম্পূর্ণ শেষ করতে মেয়াদ বাড়ানো লাগতে পারে।”