যশোরে আতাই নদীর বাঁধ ভেঙে শতাধিক পরিবার পানিবন্দি, প্লাবিত গ্রাম-ফসলি জমি-ঘের

- আপডেট সময় : ০৭:৩৪:০৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫ ২৬ বার পড়া হয়েছে
অব্যাহত বর্ষণ ও নদীতে জোয়ারের চাপে যশোরের অভয়নগর উপজেলার আতাই নদীর একটি গুরুত্বপূর্ণ বাঁধ ভেঙে পড়েছে। এর ফলে সিদ্ধিপাশা ইউনিয়নের শান্তিপুর ও রামনগর গ্রামের শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে, তলিয়ে গেছে ফসলি জমি, মাছের ঘের ও গ্রামীণ রাস্তা। স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় প্রতি বর্ষায় বাঁধ ভেঙে পড়ার ঘটনা ঘটছে।
বাঁধ ভাঙার ঘটনাটি ঘটে ২৮ জুলাই:
ওইদিন সন্ধ্যার পর অভয়নগরের রিশিপাড়া এলাকার আতাই নদীর বাঁধটি প্রবল পানির চাপে ভেঙে যায়। বাঁধের প্রায় ২০০ মিটার অংশ ধসে গিয়ে নদীর পানি গ্রামে ঢুকে পড়ে। এতে শান্তিপুর ও রামনগর গ্রামের ঘরবাড়ি, রাস্তা, ফসলি জমি এবং মাছের ঘের পানিতে ডুবে যায়। গ্রামবাসীরা জানান, হাঁটু পানি মাড়িয়ে বাড়ি থেকে বের হতে হচ্ছে; অনেকের বসতঘরেই পানি ঢুকে গেছে।
ক্ষতির চিত্র:
৩১ জুলাই সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এলাকার প্রধান সড়কসহ বেশিরভাগ পথঘাট পানির নিচে। স্থানীয় কৃষকরা জানাচ্ছেন, শত শত বিঘা জমির ধান ও শাকসবজি নষ্ট হয়ে গেছে, ভেসে গেছে পোনা ও চাষের মাছ। এমন দুর্ভোগে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষক ও ঘের মালিকরা।
স্থানীয়দের ক্ষোভ:
বাঁধ ভেঙে যাওয়ার পেছনে পানি উন্নয়ন বোর্ডের অবহেলাকে দায়ী করেছেন ভুক্তভোগীরা। তাদের অভিযোগ, বছরের পর বছর বাঁধটি সংস্কার করা হয়নি, বর্ষা এলেই এই ভাঙনের পুনরাবৃত্তি ঘটে। শান্তিপুর গ্রামের বাসিন্দারা বলেন, “প্রতিবারের মতো এবারও বাঁধ ভেঙে গেল। অথচ আগেই ব্যবস্থা নিলে এমন ক্ষতি হতো না। আমরা টেকসই বাঁধ চাই।”
প্রশাসনের আশ্বাস:
সিদ্ধিপাশা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ আবুল কাশেম বলেন, “পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমরা উপজেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে সমন্বয়ে কাজ করছি। অল্প সময়ের মধ্যে বাঁধ মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হবে।”
অভয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পার্থ প্রতিম শীল জানান, “বর্তমানে ভেঙে যাওয়া বাঁধের দুর্বল অংশ সাময়িকভাবে মেরামতের কাজ শুরু হয়েছে। বর্ষা মৌসুম শেষে একটি দীর্ঘমেয়াদি ও টেকসই বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে।”
চাহিদা একটাই—দ্রুত স্থায়ী সমাধান:
দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর দাবি, শুধু সাময়িক মেরামত নয়, দীর্ঘস্থায়ী ও টেকসই বাঁধ নির্মাণ করতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে আর এমন দুর্ভোগ না হয়। একইসঙ্গে দ্রুত ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ত্রাণসহায়তা ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়েছে।