মাঠে ছাতা দিয়ে ব্যান্ডেজ! কলকাতা লিগে তারক হেমব্রমের চোটে চিকিৎসা–নিরাপত্তার করুণ চিত্র

- আপডেট সময় : ০৯:১৩:৪১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ জুলাই ২০২৫ ৩৫ বার পড়া হয়েছে
কলকাতা লিগে মোহনবাগান দুর্দান্ত ছন্দে ফিরলেও সোমবারের (৮ জুলাই) ব্যারাকপুর স্টেডিয়ামের ম্যাচে আলোচনার কেন্দ্রে ছিল না জয় কিংবা গোল—মূল বিষয় হয়ে উঠেছিল এক ফুটবলারের চোট ও সেই সঙ্গে চিকিৎসা সেবার অভাবজনিত অব্যবস্থাপনা।
রেলওয়ের বিপক্ষে ২-০ গোলে জয়ের দিনে মোহনবাগান প্রথমার্ধেই লিড নেয়। রেলওয়ের গোলরক্ষক সুদীপ্ত ঘোষের ভুল কাজে লাগিয়ে গোল করেন সন্দীপ মালিক। কর্দমাক্ত মাঠে বলের গতি ভুল বুঝে এগিয়ে আসেন সুদীপ্ত, তার সামনে থেকে বল ছিনিয়ে দেন সালাউদ্দিন এবং সন্দীপ ফাঁকা পোস্টে বল পাঠিয়ে দেন।
তবে দ্বিতীয়ার্ধে ম্যাচে উত্তেজনা চরমে ওঠে। রেফারি দেখান তিনটি লাল কার্ড—মোহনবাগানের সালাউদ্দিন ও রেলের দুই খেলোয়াড় সুদীপ্ত ও সন্দীপ বহিষ্কৃত হন। হলুদ কার্ডও দেখানো হয় একাধিকবার। খেলা কিছু সময়ের জন্য বন্ধও থাকে। শেষ দিকে পরিবর্ত খেলোয়াড় শিবম মুন্ডা গোল করে ব্যবধান ২-০ তে নিয়ে যান।
তবে ম্যাচের সবচেয়ে করুণ দৃশ্যটি দেখা যায় রেলের ফুটবলার তারক হেমব্রম চোট পাওয়ার পর।
প্রথমার্ধে সংঘর্ষের জেরে তারক মারাত্মকভাবে আহত হন। মাঠেই বোঝা যায়, চোট গুরুতর। অথচ কোনো প্রশিক্ষিত চিকিৎসাকর্মী বা পর্যাপ্ত চিকিৎসা ব্যবস্থা ছিল না মাঠে। হতবাক দর্শকেরা দেখতে পান, ছাতা দিয়ে দু’পাশ থেকে তার পা বেঁধে তাকে বাইরে নেওয়া হচ্ছে। এই অমানবিক দৃশ্য সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে এবং তীব্র সমালোচনার জন্ম দেয়।
প্রাথমিকভাবে তাকে ঢাকুরিয়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হলেও মাঠে থাকা একমাত্র অ্যাম্বুল্যান্স সরিয়ে নিতে আয়োজকরা দ্বিধায় পড়েন। পরে দ্বিতীয় অ্যাম্বুল্যান্স ডাকা হলেও সেটি আসতে দেরি হয়। অবশেষে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা সম্ভব হয়।
প্রশ্ন উঠছে—একটি বড় লিগ ম্যাচে কেন ন্যূনতম চিকিৎসা ও জরুরি পরিষেবা নিশ্চিত করা হয়নি? খেলোয়াড়দের নিরাপত্তা নিয়ে এত উদাসীনতা কেন?
মোহনবাগান মাঠে জয় পেলেও ম্যাচ শেষে আলোচনার মূল কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে তারক হেমব্রমের চোট ও চিকিৎসা সেবার করুণ চিত্র। ক্রীড়ামহলে দাবি উঠছে—এমন অব্যবস্থাপনার দায় নিতে হবে আয়োজকদের এবং ভবিষ্যতের জন্য নিতে হবে কঠোর পদক্ষেপ।