পারিবারিক ভ্রমণে গিয়ে সোয়াত নদীতে ট্র্যাজেডি: আকস্মিক বন্যায় ১০ জনের মৃত্যু, নিখোঁজ বহু

- আপডেট সময় : ০৭:৩৬:৩৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫ ১৯ বার পড়া হয়েছে
পারিবারিক আনন্দভ্রমণ মুহূর্তেই রূপ নিল এক ভয়াবহ ট্র্যাজেডিতে। পাকিস্তানের সোয়াত জেলার ফিজাগাট এলাকায় আকস্মিক বন্যায় ভেসে গিয়ে অন্তত ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিখোঁজ রয়েছেন আরও অনেকে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শিয়ালকোট ও মারদান থেকে আগত দুটি পরিবারের সদস্যরা সোয়াত নদীর ধারে প্রকৃতি উপভোগ করছিলেন। ঠিক সে সময় হঠাৎ করেই নদীতে পানির উচ্চতা বিপজ্জনকভাবে বেড়ে যায় এবং প্রবল স্রোতে তারা ভেসে যান।
দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের বরাতে জানা যায়, দুর্ঘটনায় নিহতদের মধ্যে রয়েছেন—
আব্দুর রহমান, পরিবার প্রধান
তার পুত্রবধূ রুবিনা কাওসার
নাতি-নাতনি: আবদুল্লাহ (১৫), তাজমিন (২১), শারমিন (১৯)
কন্যা ফওজিয়া, তার স্বামী মোহসিন এবং তাদের চার মেয়ে—মিরাব (১৭), আজওয়া (১৫), ইশাল (১৩) ও আনফাল (৯)
অপর কন্যা আয়েশা ও তার চার সন্তান—আইমা (১২), আয়ান (৯), জিয়ান (৫) এবং জোহান (৩) নিখোঁজ রয়েছেন।
স্থানীয় প্রশাসন ও স্বেচ্ছাসেবীদের সহযোগিতায় উদ্ধারকাজ শুরু করে রেসকিউ ১১২২। উদ্ধার হওয়া মৃতদেহের মধ্যে রয়েছে—মিরাব, আজওয়া, আয়ান, এক চাচাতো ভাই এবং মোহসিনের শ্যালিকা তোবিনা ইসলাম।
ঘটনার পর স্থানীয় এলাকাজুড়ে নেমে আসে শোকের ছায়া। ডাস্কার পুরো মহল্লা একত্রে শোক পালন করছে। শোকাহত পরিবারগুলোর সঙ্গে দেখা করেছেন ডাস্কার সহকারী কমিশনার উসমান গনি, এবং জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সমবেদনা জানিয়েছেন।
খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের রেসকিউ ১১২২-এর মহাপরিচালক শাহ ফাহাদ জানান, “পাঁচটি স্থানে একযোগে উদ্ধার অভিযান চলছে, যেখানে আমাদের ৮০ জন সদস্য নিযুক্ত আছেন।”
এদিকে, প্রাদেশিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (পিডিএমএ) জানিয়েছে, টানা ভারি বর্ষণের কারণে নদীর পানি অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে। আকস্মিক এ পানির তোড়ে অন্তত ১৯ জন পর্যটক ভেসে যান, যাদের মধ্যে নারী ও শিশুও ছিলেন।
পিডিএমএ আরও জানায়, ভেসে যাওয়া ১৯ জনের মধ্যে এখন পর্যন্ত কেবল তিনজনকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ জনে, নিখোঁজ রয়েছেন ১৮ জন।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, বিভিন্ন এলাকা থেকে ৭৫ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে, যাদের মধ্যে ৫৮ জনকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া সম্ভব হয়েছে। এখনো অনেকেই আটকা রয়েছেন বলে জানা গেছে।
ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শোক ও ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। নেটিজেনরা পর্যটন এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার এবং সচেতনতা বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছেন।
এ ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ, এবং নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।