ইবি শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ, ভিডিও কলে ছাত্রীকে দেখতে চাওয়া নিয়েও প্রশ্ন

- আপডেট সময় : ০৬:২৫:১১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩ জুলাই ২০২৫ ২০ বার পড়া হয়েছে
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আজিজুল ইসলামের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানিসহ নানা অভিযোগ তুলেছেন একই বিভাগের একাধিক ছাত্রী। গত ২২ জুন বিভাগের সভাপতির কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন প্রায় ১২ জন শিক্ষার্থী। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অভিযুক্ত শিক্ষককে অনির্দিষ্টকালের জন্য বিভাগের সকল কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছে।
বুধবার (২ জুলাই) বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।
অভিযোগপত্রে ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের এক ছাত্রী উল্লেখ করেন, ড. আজিজুল ইসলাম তাকে ইমোতে ভিডিও কল দেন। কল রিসিভ না করলে অডিও কল দিয়ে বলেন—”অনেকদিন তোমাদের দেখি না, মোটা হয়েছো নাকি চিকন—দেখার জন্যই ভিডিও কল দিচ্ছি।” এছাড়া তিনি ছাত্রীর ব্যক্তিগত জীবন ও সম্পর্ক নিয়েও মন্তব্য করেন এবং ক্লাসে অপমানজনক ও অশালীন কথা বলেন।
ওই ছাত্রী আরও জানান, স্যার ক্লাসে তাকে উদ্দেশ্য করে শরীর, উচ্চতা ও বৈবাহিক জীবন নিয়ে কুরুচিপূর্ণ রসিকতা করেন। এমনকি সবার সামনে মেন্সট্রুয়েশন সাইকেল নিয়ে বাজে মন্তব্য করেন, যা ছিল অত্যন্ত অপমানজনক। তিনি হুমকি দিতেন, তার কোর্সে ভালো নম্বর পাওয়া যাবে না।
একই ধরনের অভিযোগ তুলেছেন বিভাগের আরও শিক্ষার্থীরা। অভিযোগে বলা হয়, ড. আজিজুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে ছাত্রীদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করে আসছেন। হোয়াটসঅ্যাপে অশ্লীল বার্তা পাঠানো, রুমে ডেকে ব্যক্তিগত বিষয়ে প্রশ্ন করা, রাতের বেলায় ভিডিও কল দেওয়া, পছন্দের ছাত্রীদের নিজের প্রজেক্টে যুক্ত করতে চাপ প্রয়োগ এবং ভালো রেজাল্ট না দেওয়ার ভয় দেখানো—এসবই ছিল তার আচরণের অংশ।
ছাত্রীদের অভিযোগ, এতদিন ভয়ে কেউ মুখ খুলতে পারেনি। তবে এবার একসাথে ১২ জন ছাত্রী প্রতিবাদ জানানোয় বিষয়টি সামনে এসেছে।
অভিযোগ সম্পর্কে ড. আজিজুল ইসলাম বলেন, “আমি কাউকে হেনস্তা করিনি। তারা আমার আচরণ ও কথাগুলো ভুলভাবে বুঝেছে। এটি আমার বিরুদ্ধে একটি পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র।”
এ বিষয়ে বিভাগীয় সভাপতি অধ্যাপক ড. এ কে এম নাজমুল হুদা বলেন, “অভিযোগ পাওয়ার পর আমরা একাডেমিক কমিটির বৈঠকে বিষয়টি আলোচনা করেছি এবং প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগের ভিত্তি পেয়েছি। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত তিনি বিভাগীয় দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না।”
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছে, অভিযোগের তদন্তে শিগগিরই একটি আনুষ্ঠানিক কমিটি গঠন করা হবে।