স্ত্রীকে ছুরিকাঘাতে হত্যার পর নিজেই আত্মহত্যা করলেন স্বামী, সন্তান পেল সম্পত্তি

- আপডেট সময় : ০১:১২:৫৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২ জুলাই ২০২৫ ৪০ বার পড়া হয়েছে
ময়মনসিংহ শহরে এক মর্মান্তিক পারিবারিক ট্র্যাজেডির ঘটনা ঘটেছে। তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীকে ছুরিকাঘাতে হত্যার পর আত্মহত্যা করেছেন ওমানফেরত এক প্রবাসী স্বামী। নিহত নারীর সন্তানকে সম্পত্তি বুঝিয়ে দিয়ে জীবনাবসান করেন তিনি।
ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার (১ জুলাই) ভোরে শহরের গুলকীবাড়ি এলাকায়। পুলিশ নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নেত্রকোণা সদরের রাজুর বাজার এলাকার রওশন আক্তার (৪২) ময়মনসিংহ শহরের গুলকীবাড়ি এলাকায় একটি বাসায় মেয়েকে নিয়ে সাবলেট হিসেবে ভাড়া থাকতেন। তার সাবেক স্বামী রাকিবুল করিম (৫০) ছিলেন ওমানপ্রবাসী এবং শহরের সেনবাড়ি এলাকার বাসিন্দা। তাদের সংসারে দুটি কন্যাসন্তান রয়েছে—একজন ঢাকায় ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং অন্যজন ময়মনসিংহ ক্যান্টনমেন্ট কলেজে উচ্চমাধ্যমিকে পড়ছে।
দাম্পত্য কলহের জেরে তিন মাস আগে স্ত্রী রওশন আক্তার রাকিবুলকে ডিভোর্স দেন। এ ঘটনার পর তিনি আলাদা থাকছিলেন।
পুলিশ জানায়, গত ২৪ জুন ওমান থেকে দেশে ফেরেন রাকিবুল করিম। মঙ্গলবার ভোররাতে রওশন আক্তারের বাসায় ঢুকে তিনি ধারালো ছুরি দিয়ে হামলা চালান। এ সময় তার ছোট মেয়ে রোজা আক্তার মাকে রক্ষার চেষ্টা করলেও ভয়ে পাশের কক্ষে আশ্রয় নেয়। নির্মমভাবে রওশন আক্তারকে হত্যার পর রাকিবুল একই বাসার অন্য একটি কক্ষে গিয়ে ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন।
এ সময় তিনি নিজের জমি-জমার দলিলপত্র ও মূল্যবান কাগজপত্র ছোট মেয়েকে বুঝিয়ে দেন বলে জানিয়েছেন পুলিশ কর্মকর্তারা।
ময়মনসিংহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) আবদুল্লাহ আল মামুন সাংবাদিকদের বলেন, “তদন্তে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, স্ত্রীকে হত্যার আগে রাকিবুল করিম তার সম্পত্তির কাগজপত্র মেয়েকে বুঝিয়ে দেন। এটি একটি চরম পারিবারিক ট্র্যাজেডি। বিষয়টি আমরা গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করছি।”
ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে।
[5:08 PM, 7/2/2025] Rohan: পুরান ঢাকায় ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে প্রাণ হারাল এসএসসি পরীক্ষার্থী তানিম
ঢাকার পুরান ঢাকায় ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে তানিম নামে এক এসএসসি পরীক্ষার্থী প্রাণ হারিয়েছেন। বুধবার (২ জুলাই) ভোররাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
নিহত মোরশেদ আলম তানিম (১৮) লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার বামনী গ্রামের ফিরোজ আলম আমিরের ছেলে। তিন ভাইবোনের মধ্যে সে ছিল সবার বড়। এসএসসি পরীক্ষার্থী তানিম পুরান ঢাকার বংশালের নুর বক্স লেনে নানির বাসায় থেকে পড়াশোনা করত। বাবা-মা থাকেন নাজিমউদ্দিন রোডের সুক্কু মিয়ার গলিতে। সে আহমেদ বাওয়ানী একাডেমি স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এ বছর মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছে।
তানিমের বাবা ফিরোজ আলম জানান, সোমবার (৩০ জুন) রাত সাড়ে ১১টার দিকে নাজিমউদ্দিন রোডের পুরাতন জেলখানার পাশে মাকুশাহ মাজার এলাকার রাস্তায় ছিনতাইকারীরা তার ছেলের ওপর হামলা চালায়। দুই দুর্বৃত্ত পেছন থেকে এসে ছুরি দেখিয়ে মানিব্যাগ ও মোবাইল নিতে চাইলে বাধা দেয় তানিম। এ সময় তার বন্ধুরা কয়েক হাত দূরে ছিল। বাধা দেওয়ার পরই ছিনতাইকারীরা তানিমের পেটে ছুরি মেরে পালিয়ে যায়।
পথচারীরা ও তার বন্ধুরা দ্রুত তাকে উদ্ধার করে প্রথমে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও পরে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যান। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ওইদিন তাকে বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু পরদিন মঙ্গলবার (১ জুলাই) বিকেলে হঠাৎ অবস্থার অবনতি হলে পুনরায় ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়। সেখানেই বুধবার ভোরে তার মৃত্যু হয়।
চকবাজার থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মানিক উদ্দিন জানান, মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি তদন্তাধীন এবং এ ঘটনায় একটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
স্বজনরা দাবি করেছেন, ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতেই তানিমের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তারা।