তালাকের দুই ঘণ্টা পর প্রেমিকের সঙ্গে নারীকে বিয়ে, এলাকায় তোলপাড়

- আপডেট সময় : ০৮:৫৯:৫৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫ ২৩ বার পড়া হয়েছে
গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি,
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার দক্ষিণ হিরন গ্রামে তালাকের মাত্র দুই ঘণ্টা পর এক নারী তার প্রেমিককে বিয়ে করেছেন। ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার (২৫ জুন) বিকেলে, যা এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।
জানা গেছে, তিন বছর আগে দক্ষিণ হিরন গ্রামের সিদ্দিক মোল্লার ছেলে খায়রুল মোল্লার সঙ্গে পার্শ্ববর্তী চিতশী গ্রামের কেরামত আলী শেখের মেয়ে জেসমিন বেগমের (২৫) বিয়ে হয়। দাম্পত্য জীবনে তাদের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে।
খায়রুল মোল্লা জীবিকার তাগিদে প্রায়ই বাড়ির বাইরে থাকতেন। এ সুযোগে জেসমিনের সঙ্গে একই গ্রামের আক্তার শেখের ছেলে হাসিব শেখের (২৫) প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে, যা ধীরে ধীরে পরকীয়ায় রূপ নেয়।
গত মঙ্গলবার রাতে হাসিব গোপনে জেসমিনের ঘরে ঢোকার সময় পরিবারের সদস্যদের হাতে আপত্তিকর অবস্থায় ধরা পড়েন। পরে দুজনকেই ঘরে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়।
পরদিন বিকেলে গ্রামে সালিশ বসে, যেখানে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি, জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতারা উপস্থিত ছিলেন। সালিশে সামাজিক চাপের মুখে খায়রুল মোল্লা স্ত্রীকে তালাক দিতে বাধ্য হন।
তালাকের মাত্র দুই ঘণ্টা পর ঘাঘর বাজারে ৪ লাখ টাকা দেনমোহর ধার্য করে জেসমিন বেগম ও হাসিব শেখের বিয়ে সম্পন্ন হয়। নবদম্পতি জানান, তারা তাদের এই সিদ্ধান্তে সন্তুষ্ট এবং সকলের কাছে দোয়া চেয়েছেন।
তবে বিষয়টি নিয়ে আইনি ও সামাজিক বিতর্ক দেখা দিয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট খান চমন-ই-এলাহী বলেন, “শরিয়ত ও আইনের দৃষ্টিতে তালাকের পর ইদ্দতকাল পূর্ণ না করে এই বিয়ে বৈধ নয়। এ ধরনের সালিশ পরিচালনাকারীদেরও আইনের আওতায় আনা উচিত।”
এদিকে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী কোটালীপাড়া উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক রতন সেন কংকন বলেন,
“নারী নির্যাতন, ধর্ষণ ও এমন অযোগ্য অপরাধের সালিশ যেভাবে হচ্ছে, তা নিন্দনীয়। বিচারপ্রক্রিয়াকে বিকৃত করে এসব সালিশ সমাজে বিচারহীনতার সংস্কৃতি তৈরি করছে।”
এ বিষয়ে কোটালীপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ জানান,
“ঘটনাটি সম্পর্কে এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”